২৪০০ কবিতা লিখেছেন বালুশ্রমিক

0
62
২৪০০ কবিতা লিখেছেন বালুশ্রমিক
লিখেছেন বালুশ্রমিক

বালুশ্রমিক গুলজার হোসেন গরিব লিখেছেন ২৪০০ কবিতা। এলাকায় যাকে মানুষ চেনে ‘গরিব কবি’ নামে। সারাদিন পরিশ্রমের পরে যেটুকু সময় পান সেই সময়ে রচনা করেন তিনি কবিতা। 

গুলজার হোসেন গরিব’র বাড়ি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মহারাজপুর গ্রামের আর্থিক দৈন্যতার কারণে মহারাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪র্থ শ্রেণীতে অধ্যয়নরত অবস্থায় ইতি টানতে হয় শিক্ষাজীবনের।

১০ বছর বয়স থেকেই কৃষিকাজে পিতাকে সহযোগিতা করতে শুরু করেন তিনি। বয়স কিছুটা বাড়তে শুরু হয় জীবন সংগ্রাম। আইসক্রিম বিক্রি, ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাতেন তিনি। এর মাঝেই সময় পেলে বই পড়তেন। বই পড়তে পড়তেই কবিতার জগতে প্রবেশ তার।

২০০১ সালে ‘আহ্বান’ নামের একটি কবিতা লিখে হাতেখড়ি তার। প্রথম কবিতা দেখে স্বজন ও বন্ধুদের বাহবা পেয়ে বেড়ে যায় তার উৎসাহ। একে একে লেখেন ‘গভীর রাত’, ‘তোমাকে হত্যার পর’, ‘গরিবের বিদ্বেষ’, ‘প্রিয় সাবির হাকা’, ‘এখানে যা নেই’, করোনা নিয়ে ‘ভাইরাস’সহ প্রায় ২ হাজার ৪০০ কবিতা। ১০টি প্রবন্ধও লিখেছেন তিনি। নিজের কণ্ঠে আবৃতিও করেন তিনি। লিখেছেন ২১০ টি গানও।

সম্প্রতি গুলজার হোসেনের ‘তোমাকে হত্যার পর’ ভারতের আবৃত্তিকার অনিন্দিতা মোদক আবৃত্তি করেছেন, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ছাড়া ‘নদী মানুষ ও বাঁক’ নামে একটি প্রবন্ধ ভারতের একটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।

ঝিনাইদহের বেগবতি প্রকাশনা ল্যাম্পপোস্টই আলো, ঢাকার ইনভেলাপ প্রকাশনা থেকে গরিবের বিদ্বেষ ও কুহকে মোহিত নামে তাঁর তিনটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।

 গুলজার হোসেন বলেন, আমি লেখাপড়া বেশি করতে পারিনি। পড়াশোনার প্রতি খুবই আগ্রহ ছিল। কিন্তু অভাবের কারণে বেশি করতে পারিনি। তবুও লেখালেখির প্রতি আমার আগ্রহ তৈরী হয়। ২০০১ সাল থেকে লেখা শুরু করি। এখনও লেখে যাচ্ছি।

২০০৫ সাল থেকে বালি শ্রমিকের কাজ শুরু করি। আগে আড়াই’শ থেকে ৩’শ টাকা পেতাম এখন ৫’শ থেকে ৬’শ টাকা পায়। নিজে স্কুলে যেতে পারিনি। তবে দুই সন্তানকে পড়াচ্ছি। মেয়ে মিতা নূর এবার এসএসসি পরীক্ষা দেবে। ছেলে একরামুল কবির নবম শ্রেণিতে পড়ছে।