প্যান্ডোরা পেপার্সে ৮ বাংলাদেশির নাম

0
52
প্যান্ডোরা পেপার্সে ৮ বাংলাদেশির নাম
প্যান্ডোরা পেপার্সে ৮ বাংলাদেশির নাম

বিশ্বের সবচেয়ে বড় আর্থিক কেলেঙ্কারির দ্বিতীয় দফায় প্রকাশিত প্যান্ডোরা পেপার্সে ৮ বাংলাদেশির নাম পাওয়া গেছে। গত সোমবার বাংলাদেশ সময় মধ্যরাতে ওয়াশিংটনভিত্তিক অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক কনসোর্টিয়াম ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টসের (আইসিআইজে) ফাঁসকৃত গোপনীয় আর্থিক দলিলপত্রে তাদের নাম প্রকাশ করা হয়েছে।

প্যান্ডোরা পেপার্সে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের গোপনীয় আর্থিক দলিলপত্রে বলা হয়েছে, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডে নিবন্ধিত কোম্পানির মালিক ওই ৮ বাংলাদেশি।

আইসিআইজের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, প্যান্ডোরা পেপার্সের গোপনীয় আর্থিক দলিলপত্র বিশ্লেষণ করে দ্বিতীয় দফায় ১৫ হাজারেরও বেশি অফশোর কোম্পানি, ফাউন্ডেশন, ট্রাস্ট এবং অন্যান্য সংস্থার সুবিধাভোগী মালিকদের তথ্য প্রকাশ করছে ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্ট।

পানামার আইনি সংস্থা অ্যালেমান, কর্ডেরো, গ্যালিন্ডো অ্যান্ড লি (অ্যালকোগাল) এবং ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জের সদর দফতরে অবস্থিত ফিডেলিটি করপোরেট সার্ভিসেসের কাছ থেকে এসব তথ্য পেয়েছে আইসিআইজে। বিশ্বের ১১৭টি দেশের দেড়শ’ গণমাধ্যমের ৬ শতাধিক সাংবাদিকের দীর্ঘ অনুসন্ধানে আর্থিক এই কেলেঙ্কারির তথ্য ফাঁস হয়েছে প্যান্ডোরা পেপার্সে।

দ্বিতীয় দফার এই গোপনীয় নথিপত্র প্রকাশের মাধ্যমে আইসিআইজের অফশোর লিকস ডেটাবেসে এখন ৮ লাখের বেশি অফশোর কোম্পানি এবং প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে। যা ভিন্ন ভিন্ন পাঁচটি তথ্য ফাঁসের ঘটনা থেকে পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে আইসিআইজে। অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক এই কনসোর্টিয়ামের কাছে ২০০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলের মানুষ এবং কোম্পানির গোপন অর্থের হদিস মিলেছে।

প্যান্ডোরা পেপার্সে যে ৮ বাংলাদেশির নাম পাওয়া গেছে তাদের সবারই অন্যান্য দেশের নাগরিকত্বও আছে। এসব দেশের মধ্যে আছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া এবং আর্জেন্টিনা। তবে এই তালিকায় ঠাঁই পাওয়া বাংলাদেশিদের অবৈধ কর্মকা-ের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এমনকি যে সাংবাদিকরা এই তথ্য ফাঁস করেছেন তারাও সেটি নিশ্চিত করতে পারেননি।

দ্বিতীয় দফায় প্রকাশিত প্যান্ডোরা পেপার্সের তালিকায় নিহাদ কবীর নামের এক বাংলাদেশি নারীর নাম রয়েছে। তালিকায় ইসলাম মঞ্জুরুল নামের আরেক বাংলাদেশি আছেন। এছাড়াও অনিতা রানি ভৌমিক, সাকিনা মিরালি, মোহাম্মদ ভাই, ওয়াল্টার প্রহমাদ, ড্যানিয়েল আর্নেস্তো আয়ুবাতি ও সাইদুল হুদা চৌধুরী নামে কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে; যারা বাংলাদেশি পরিচয় ব্যবহার করেছেন।

এর আগে, গত ৩ অক্টোবর প্রথম দফায় বিশ্বের প্রভাবশালী এবং ধনাঢ্য ব্যক্তিদের পেশাদার সেবা দিয়ে নামমাত্র কর অথবা করবিহীন ব্যবসা ও সম্পদ কেনার কাজে সহায়তা করেছে এমন ১৪টি কোম্পানির ১ কোটি ২০ লাখ গোপনীয় আর্থিক দলিলপত্র বিশ্লেষণ করে তথ্য ফাঁস করা হয় প্যান্ডোরা পেপার্সে।

প্যান্ডোরা পেপার্স কী?

গত ৩ অক্টোবর প্রথম দফায় বিশ্বের সাবেক ও বর্তমান ৩৫ রাষ্ট্রপ্রধান, ৯০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলের ৩ শতাধিক রাজনীতিক ও সামরিক কর্মকর্তা এবং প্রায় একশ ধনকুবেরের গোপন সম্পদ ও লেনদেনের তথ্য ফাঁস হয় প্যান্ডোরা পেপার্সে। এটি ইতিহাসের অন্যতম বৃহৎ আর্থিক গোপনীয় দলিলপত্র ফাঁসের ঘটনা। এর মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও রাজনীতিকদের অফশোর কোম্পানি ব্যবহার করে গোপনে বিদেশে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ার তথ্য হাজির করা হয়।